মহেড়া জমিদার বাড়ি, টাঙ্গাইল

বাংলাদেশের জমিদার বাড়ি গুলো ভালো মতো রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না । কোনো কোনো জমিদার বাড়ির এক অংশ ধ্বংস হয়ে পড়ে যাচ্ছে । আবার কোথাও পরিচর্যার অভাবে পর্যটক হারাচ্ছে ।

কিন্তু মহেড়া জমিদার বাড়ি আবার সে দিক থেকে অন্য রকম । দেখলেই আপনার চোখ জুড়িয়ে যাবে । ভেতরে প্রবেশ করেই আপনি চার পাশে চারটি অট্টালিকা দেখতে পাবেন।

১৮৯০ সালে চার ভাই মিলে টাঙ্গাইলে জমিদারি শুরু করেন । তারা মূলত স্পেন এর জমিদার প্রথা থেকে উৎসাহিত হয়ে এই প্রথা শুরু করেন । শুরু দিকে ইংরেজরা তাদের অনেক উপর কার করে ।

মূলত চার ভাই
বুদাই সাহা,
বুদ্ধু সাহা,
হরেন্দ্র সাহা
এবং
কালীচরণ সাহা মিলে এই জমিদার প্রথা শুরু করেন ।

চার ভাই চার বাড়িতে তাদের নিজস্ব উপায়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতেন । পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এই জমিদার বাড়িতে আক্রমণ করে । ১৯৭১ সালের ১৪ ই মে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে পাকবাহিনী মহেড়া জমিদার বাড়ীতে হামলা করে ।

জমিদার কূলবধু যোগমায়া রায় চৌধুরীসহ পাঁচজন গ্রামবাসীকে চৌধুরী লজের মন্দিরের পেছনে একত্রে দাঁড় করিয়ে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে তারা।

তাদের মধ্যে স্থানীয় প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক পন্ডিত বিমল কুমার সরকার, মনিন্দ্র কুমার চক্রবর্তী, অতুল চন্দ্র সাহা এবং নোয়াই বণিক ছিলেন। এরপরই জমিদার পরিবার দেশত্যাগ করেন।

এরপর ১৯৭২ সালে পরিত্যাক্ত বাড়িতে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার গড়ে উঠে ।

বর্তমানে জমিদার বাড়িতে ভ্রমণের পাশাপাশি পার্কে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। সাথে আছে মিনি চিড়িয়াখানা।

পিকনিক স্পটে অনায়াসে করতে পারেন পারিবারিক বা প্রাতিষ্ঠানিক পিকনিকের আয়োজন।

মহেড়া জমিদারবাড়িতে প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা।

ঢাকার মহাখালী বাস স্টেশন থেকে বিনিময়, নিরালা, ধলেশ্বরী, ঝটিকা ইত্যাদি বাস যায় টাঙ্গাইল। ভাড়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা।

এসব বাসে চড়ে পুলিশ রোড বাসষ্ট্যান্ডে নেমে অপেক্ষমান সিএনজি বেবীটেক্সী যোগে (ভাড়া ৭৫ টাকা, শেয়ারে জন প্রতি ১৫ টাকা) যেতে পারবেন। মহাসড়কে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, মহেড়া, টাঙ্গাইল নামে দিক নির্দেশনা ফলক আছে।

আর যারা উত্তরবঙ্গ থেকে আসবেন তারা যে কোন ঢাকাগামী বাসে টাঙ্গাইল পার হয়ে ১৭ কিঃমিঃ পর পুলিশ রোড নেমে একইভাবে যেতে পারেন। এটি বাংলাদেশের একমাত্র জমিদার বাড়ি যেখানে আপনি রাত্রি যাপন করতে পারবেন