বগুড়া ও যশোরে উপনির্বাচনের ভোট আজ

সংসদীয় আসনের (বগুড়া-১ ও যশোর-৬) এই দুই আসনের উপনির্বাচনে আজ ভোটগ্রহণ। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বিঘ্নে ভোট আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

এদিকে গত রোববার দুটি আসনের উপনির্বাচনের প্রচার শেষ হয়েছে। আরপিওর ৭৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ভোটগ্রহণ শুরুর পূর্ববর্তী ৪৮ ঘণ্টা এবং শেষ হওয়ার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে নির্বাচনী এলাকায় যেকোনো ধরনের সভা, সমাবেশ ও মিছিল, শোভাযাত্রা করা যাবে না। আসন্ন বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে উপনির্বাচন উপলক্ষে ভোটের আগে-পরে ৭২ ঘণ্টার জন্য গাড়ি চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কমিশন। একই সঙ্গে ভোটের দিন সব ধরনের যন্ত্র যানও বন্ধ থাকবে। নির্দেশনাটি বাস্তবায়নের জন্য গত সোমবার ইসির উপসচিব আতিয়ার রহমান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি পাঠিয়েছেন।

এতে বলা হয়, আগামী ১৪ জুলাই অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদের ৩৬ বগুড়া-১ ও যশোর-৬ শূন্য আসনের নির্বাচন উপলক্ষে ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিবসের পূর্ববর্তী মধ্যরাত অর্থাৎ গতকাল ১৩ জুলাই মধ্যরাত ১২টা থেকে ১৪ জুলাই মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, ইজিবাইক, পিকআপ, টেম্পো, ট্যাক্সি ক্যাব, কার, ইজিবাইক এবং স্থানীয় পর্যায়ের মাইক্রোবাস, বাস, বিভিন্ন যন্ত্রচালিত যানবান, জিপ, ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া এর আগে ১২ জুলাই মধ্যরাত থেকে আগামীকাল (১৫ জুলাই) মধ্যরাত পর্যন্ত অর্থাৎ ৭২ ঘণ্টা মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

এই নিষেধাজ্ঞা রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য। নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং কিছু জরুরি কাজ যেমন—অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য উল্লিখিত যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে ওই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। আবার জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এরূপ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

বগুড়া-১ আসন : মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর আসনটির উপনির্বাচনে বৈধ ছয় প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দ করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। প্রার্থীরা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের সহধর্মিণী সাহাদারা মান্নান (নৌকা), বিএনপির এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির মোকছেদুল আলম (লাঙ্গল), প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের (পিডিপি) মো. রনি (বাঘ), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নজরুল ইসলাম (বটগাছ) ও স্বতন্ত্র ইয়াসির রহমতুল্লাহ ইন্তাজ (ট্রাক)। এ নির্বাচনে ৩ লাখ ৩০ হাজার ৮৯৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।

গত ১৮ জানুয়ারি সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান মারা গেলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। এরপর শূন্য আসনে নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

বগুড়া প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য মতে, করোনা পরিস্থিতি ও বন্যার কারণে আজকের নির্ধারিত ভোট পেছানোর দাবি জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থী, জাতীয় পার্টিসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা রয়েছে মাঠে। ফলে নির্বাচনটি সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এখন ভোটের ফলে কে জয়ী হন তা দেখার অপেক্ষায় এ আসনটির মানুষ।

যশোর-৬ আসন : এ আসনে বৈধ তিন প্রার্থী প্রতীক পেয়েছিলেন। তারা হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহীন চাকলাদারকে (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ (ধানের শীষ) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব (লাঙ্গল)। এ আসনে ২ লাখ ৩ হাজার ১৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইসমাত আরা সাদেক জয়ী হন। চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি তিনি মারা যান। এর শূন্য আসনে নির্বাচনের তফসিল দেয় ইসি। এদিকে যশোর কেশবপুর থেকে পাঠানো আমাদের প্রতিনিধির তথ্য মতে, স্থাগিত হওয়া উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিএনপি এই উপনির্বাচনে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক অংশ নিচ্ছে না। ফলে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা-লাঙ্গলের মধ্যে। ধানের শীষের প্রার্থী না থাকায় ভোটে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহীন চাকলাদার।