শীতের মৌসুমে পর্যটকদের আনাগোনায় প্রাণোচ্ছল দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ নারিকেল জিঞ্জিরা খ্যাত ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপ’। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকের ভিড়ে আড়ষ্ট থাকে দ্বীপটি। প্রতিনিয়ত পর্যটকদের অসচেতনতায় অপরিচ্ছন্ন হচ্ছে এই প্রবাল দ্বীপের অনেকাংশ,নষ্ট হচ্ছে পরিবেশগত ভারসাম্য ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সমাপনী ভ্রমণের অংশ হিসেবে ব্যতিক্রমী পরিচ্ছন্নতা অভিযান “কিপ দ্যা ওশেন ক্লিন” কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় ময়লা আবর্জনা নির্ধারিত স্থানে ফেলে পরিবেশ রক্ষায় পর্যটকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, সেন্ট মার্টিনে তাঁরা তিন দিন অবস্থান করে প্রকৃতি পর্যবেক্ষণের বিভিন্ন ধরনের কাজ পরিচালনা করেন। এ সময়ে প্রবালদ্বীপে এত অল্প দূরত্বে এত পরিমাণ বর্জ্য পেয়ে তাঁরা হতবাক হয়ে যান। মানুষের এমন অসচেতনতায় দ্বীপটিকে রক্ষার ব্যাপারে তাঁরা শঙ্কাবোধ করছেন।
গত শুক্রবার (৩১জানুয়ারি) সেন্টমার্টিন থেকে বিচ্ছিন্ন সাত কিলোমিটার দূরে ছেঁড়াদ্বীপের প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ব্যতিক্রমী কর্মসূচি শুরু হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিভিন্ন পর্যটকরাও তাদের সাথে প্লাস্টিকজাত বর্জ্য সংগ্রহে এগিয়ে আসে।
পরদিন শনিবার (১জানুয়ারি) চুয়েটের ১০-১৫জন শিক্ষার্থীদের একটি দল হুমায়ুন আহমেদের সমুদ্র বিলাস সৈকতপ্রান্তর থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার রাস্তা থেকে প্লাস্টিক,চিপসের প্যাকেট, স্ট্র, একবার ব্যবহারযোগ্য চায়ের কাপ ও অপচনশীল প্রায় ১০ বস্তা বর্জ্য বস্তাবন্দি করে।
এ বিষয়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেয়া চুয়েটের চতুর্থ বর্ষের শেখ সাদি জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপটি জীববৈচিত্র্যের অপার সম্পদ,আমাদের নিজেদের অসচেতনতার কারণে ওখানকার পরিবেশ প্রকৃতি আজ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। সচেতন নাগরিক হিসেবে এবং নিজেদের সমাপনী ভ্রমণটাকে স্মরণীয় করে রাখতে চেষ্টা করছি যেখানে ঘুরতে গেছি যেই জায়গাটায় থাকছি সেই জায়গায় আধা ঘন্টার জন্য হলেও বোতল, চিপসের প্যাকেট, স্ট্রগুলো পরিষ্কার করার। আমি বিশ্বাস করি আমাদের এই ক্ষুদ্রপ্রয়াস পর্যটকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।