‘বাংলা চ্যানেল’, বঙ্গোপসাগরে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ ফেরী ঘাট থেকে সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ ফেরী ঘাট পর্যন্ত ১৬.১ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সমূদ্রপথ । ষড়জ এডভেঞ্চার এবং এক্সট্রিম বাংলার আয়োজনে এবছর ২১ মার্চ ২০১৯, সকাল ০৯:১৫ মিনিটে, অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৪তম ফরচুন বাংলা চ্যানেল সাঁতার – ২০১৯ । এই দুঃসাহসিক আয়োজনে সাঁতরিয়ে পার হবার লক্ষ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪০ জন নারী পুরুষ সাঁতারু নির্বাচিত হয়েছেন । পানিতে ডুবে মারা থেকে রক্ষা পেতে মানুষের সচেতনতা সৃষ্টির উপর গুরুত্ব আরোপ করতে সাতারুরা বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিবেন । বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এর সহায়তায় এইবারের আয়োজনে প্রধান পৃষ্ঠপোষক বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল লিমিটেড এর ব্র্যান্ড “ফরচুন” । যাবতীয় উদ্ধার অভিযান করবে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। । পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই আয়োজনের পার্টনার । ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও অফরোড বাংলাদেশ এই আয়োজনের স্পন্সর ।
এ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের প্রফেসর হাবিবুল্লাহ কনফারেন্স হলে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজিত হয় । সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল লিমিটেড এর জেনারেল ম্যানেজার ইনাম আইমেদ, পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন এর জনাব এ এইচ এম আব্দুল কাইয়ুম, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল লিমিটেড এর মার্কেটিং ম্যানেজার ফয়সাল মাহমুদ, ১৩বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয়া সাঁতারু লিপটন সরকার, ৭ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয়া ফজলুল কবির, ৪ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয়া আয়রনম্যান আরাফাত, ও বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেয়া সাঁতারুগন, প্রমুখ ।
আয়োজকরা জানান, স্পোর্টস এডভেঞ্চারকে প্রোমোট করে বিশ্বের দীর্ঘতম সমূদ্র সৈকতের পাশাপাশি এই চ্যানেল টিকে আন্তর্জাতিক ভাবে পরিচয় করার লক্ষ্যে এই আয়োজন বিগত ১৩ বছর ধরে অব্যহত আছে । বাংলাদেশের তরুণ ও যুব সমাজকে মানসিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচাতে সুস্থ্য খেলাধুলা এবং অ্যাডভেঞ্চার ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলা চ্যানেল সুইমিং এইক্ষেত্রে একটি বিশেষ স্থান দখল করবে যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে খ্যাতি বয়ে আনবে ।
বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল লিমিটেড এর জেনারেল ম্যানেজার ইনাম আইমেদ বলেন, “বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা মানুষের কাছে পোছে দিতে কর্পোরেটদের প্রতি আহবান করেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে স্পোর্টসের উপর গুরুতবারোপ করেন । পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন এর জনাব এ এইচ এম আব্দুল কাইয়ুম, টেকসই উন্নয়নের জন্য তরুনদের খেলাধুলা ও এডভেঞ্চারের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করলে সামাজিক অবক্ষয়মুক্ত একটি উন্নত বাংলাদেশ গঠন ক্রা সম্ভব
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ১৪ জানুয়ারি বাংলা চ্যানেলের যাত্রা শুরু হয়। মূলতঃ এটির স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন প্রয়াত কাজী হামিদুল হক। যিনি নিজেও একজন বিখ্যাত আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফার ও স্কুবা ডাইভার এবং নানাবিধ অ্যাডভেঞ্চার এর সাথে জড়িত ছিলেন। তাঁর তত্ত্বাবধানেই প্রথম বারের মতো ফজলুল কবির সিনা, লিপটন সরকার এবং সালমান সাঈদ ২০০৬ সালে ‘বাংলা চ্যানেল’ পাড়ি দেন। এরপর থেকে প্রতিবছরই এই আয়োজন করা হয়ে থাকে এবং ধীরে ধীরে এটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি পায় । প্রতি বছর এই অভিযানে যুক্ত হচ্ছে চ্যালেঞ্জপ্রিয় বিভিন্ন বয়সের সাঁতারু । ১৩তম আয়োজনে ৬৭ বছর বয়সে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেন মিজানুর রহমান । ১৪তম ফরচুন বাংলা চ্যানেল সাঁতার – ২০১৯ এই আয়োজনে প্রথমবারের মত নির্বাচিত হয়েছেন সোয়েব আহমেদ, যিনি ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড একজন সাঁতারু । নতুন সাঁতারুরা অংশগ্রহণ ছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ীসহ সাম্প্রতিক বছরে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেন।